অন্তরের পবিত্রতা: জান্নাতের সুসংবাদ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন সাহাবিদের সাথে বসে বললেন:
_"এই দরজা দিয়ে একজন জান্নাতি ব্যক্তি প্রবেশ করবে।"_
এরপর একজন সাধারণ সাহাবি প্রবেশ করলেন। পরপর তিনদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) একই কথা বললেন এবং প্রত্যেকবারই সেই একই সাহাবি মসজিদে প্রবেশ করলেন।
এই ঘটনা সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ)-এর মনোযোগ আকর্ষণ করল। তিনি ভাবলেন, এই ব্যক্তির বিশেষ আমল কী, যার কারণে তাকে জান্নাতি ঘোষণা করা হলো? বিষয়টি জানার জন্য তিনি ওই সাহাবির কাছে গিয়ে বললেন, "আমি আপনার সঙ্গে তিনদিন থাকতে চাই," সাহাবি সম্মতি দিলেন।
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) তিনদিন তার সাথে থাকলেন এবং লক্ষ্য করলেন যে, ওই ব্যক্তি কোনো অতিরিক্ত ইবাদত বা বিশেষ আমল করেন না। অবশেষে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) সরাসরি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন: _“আপনার এমন কী আমল আছে, যার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) আপনাকে জান্নাতি বলেছেন?”_
সাহাবি উত্তর দিলেন, _“আমার এমন কোনো বিশেষ আমল নেই, তবে এক কাজ আমি নিয়মিত করি—প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে আমার হৃদয়ে কোনো শত্রুতা বা বিদ্বেষ রাখি না। আমি সবাইকে ক্ষমা করে দিই।”_
এই ঘটনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, অন্তরের পবিত্রতা, অন্যদের প্রতি বিদ্বেষমুক্ত থাকা এবং ক্ষমা করার গুণ আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয়। এই গুণাবলি মানুষকে জান্নাতের উচ্চ মর্যাদায় পৌঁছাতে সাহায্য করে।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ:
قِيلَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ النَّاسِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: "كُلُّ مَخْمُومِ الْقَلْبِ صَدُوقِ اللِّسَانِ". قِيلَ: "صَدُوقُ اللِّسَانِ نَعْرِفُهُ، فَمَا مَخْمُومُ الْقَلْبِ؟" قَالَ: "هُوَ التَّقِيُّ النَّقِيُّ لَا إِثْمَ فِيهِ وَلَا بَغْيَ وَلَا غِلَّ وَلَا حَسَدَ".
_(مُسْنَد أَحْمَد: ٦٦٤٩)_
অনুবাদ:
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, "কোন মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ?" তিনি বললেন, "যার অন্তর পবিত্র এবং যার জবান সত্যবাদী।" তখন সাহাবিরা বললেন, "সত্যবাদী জবানকে আমরা বুঝি, কিন্তু পবিত্র অন্তর কাকে বলে?" তিনি বললেন, "যে ব্যক্তি তাকওয়াবান, অন্তর পবিত্র, তার মধ্যে কোনো পাপ, শত্রুতা, বিদ্বেষ বা হিংসা নেই।"
_(মুসনাদ আহমদ: ৬৬৪৯)_