বিকৃত যৌনাচার ও গাঁজা সেবনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন


লালন মেলা: এক ভ্রান্তির উৎসব

চলতি মাসের ১৭ই অক্টোবর কুষ্টিয়ার ছেউরিয়া লালন ফকিরের মাজারে শুরু হতে যাচ্ছে লালন মেলা। এই মেলা শুধুমাত্র একটি সাংস্কৃতিক উৎসব নয়, বরং এটি একটি চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু, যেখানে আমাদের সমাজের বিকৃত যৌনাচার ও গাঁজা সেবনের মতো সমস্যাগুলোকে প্রকাশ্যে আনা অত্যন্ত জরুরি।

বাউল ধর্মের বিকৃত চরিত্র

লালন ১৮৯০ সালে মৃত্যুবরণ করেন, কিন্তু তাঁর বাউল ধর্মের দীক্ষা নেয়া লোকজনের মধ্যে যে বিকৃত চরিত্রের উদাহরণ পাওয়া যায়, তা সত্যিই উদ্বেগজনক। ভারতের হিন্দুদের মধ্যে গোমূত্র পান জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, ঠিক তেমনি বাউলরা পান করে মূত্র ও মল, পাশাপাশি রক্ত ও বীর্য—যা আমাদের সমাজের নৈতিকতার পরিপন্থী।

মুন্সি এমদাদ আলী ও সমাজের শোষণ

মুন্সি এমদাদ আলী স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, "নাড়া যে কি ধর্ম তাহা ব্যক্ত করা বড়ই দুরূহ"—এমন অসভ্য ও অশ্লীল ব্যবহার মানুষের দ্বারা হতে পারে, তা ভাবা কঠিন। তিনি সমাজের শোষণের পিছনে মারেফতী ফকিরদের উদ্ভবকে দায়ী করেছেন, যা সামাজিক জীবনে মারাত্মক ব্যাধির সৃষ্টি করেছে।

লালনের গানে অশ্লীলতা

মোঃ আবু তাহেরের মতে, লালনের গানগুলো ইসলামবিরোধী ও শরিয়তবিরোধী। তাঁর গানে নর-নারীর অবাধ মিলন ও গুপ্ত যৌন প্রক্রিয়ায় লিপ্ত হওয়ার প্রেরণা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, লালনের গানে নাপাক দ্রব্য পান করা, কুমারী মেয়ের স্তন চুষে রোগ নিরাময়ের কথা উল্লেখিত হয়েছে। লালন বলেছেন, "গোপনে খায় বেশ্যার হাতে ভাত, তাতে কি যায় ধর্মের জাত?" নাড়ার ফকিরেরা গোপনে বা প্রকাশ্যে বেশ্যার ভাত খেলে জাত যায় না। এরপরও লালন তাদের কাছে আউলিয়া, গভীর আধ্যাত্মিক জগতের এক অবিসংবাদিত কামেল পুরুষ হিসেবে রয়ে গেছেন।

যুব সমাজের ধ্বংসের পথে

এই ফকিরের শিষ্য ও প্রশিষ্যদের মধ্যে এখন মুক্তবুদ্ধি ও উদার অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির মুখোশধারীরা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অন্তত দুবার লালনের আকড়ায় জমজমাট গাঁজার আসর ও রসরতির মিলন মেলা আয়োজন করে। ফলে, আমাদের যুব সমাজের ধ্বংস হতে আর কোনো বাধা থাকে না।

আমাদের দায়িত্ব: সচেতনতা বৃদ্ধি

এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য আমাদের উচিত এই বিষয়গুলো সবার সামনে আলোচনা করা। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সামাজিক দায়িত্ববোধের ভিত্তিতে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সমাজের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাবিদ এবং সমাজসেবকদের উচিত এই অসঙ্গতিগুলোর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।

উপসংহার: একটি সচেতন সমাজ গঠন

লালন মেলা এমন একটি উপলক্ষ যেখানে আমরা বিকৃত যৌনাচার ও গাঁজার সেবনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পারি। আসুন, আমরা একসাথে এই অসঙ্গতির বিরুদ্ধে দাঁড়াই এবং একটি সচেতন সমাজ গড়ে তুলি, যেখানে নৈতিক মূল্যবোধই হবে আমাদের শক্তি।


এই লেখার তথ্য সংগ্রহ মুফতি আব্দুল হামিদ সাহেবের "নাড়ার ফকির মুসলমান নয়" বই থেকে নেওয়া হয়েছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url