ইসলামী ভ্রাতৃত্ব ও প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব: মুসলমানদের করণীয়
ইসলাম এমন একটি জীবনব্যবস্থা, যা মুসলমানদের একে অপরের প্রতি ভ্রাতৃত্ব ও সহমর্মিতার নির্দেশ দেয়। ইসলামে প্রত্যেক মুসলমানের অধিকার রয়েছে, এবং সেগুলো রক্ষা করাকে ধর্মীয় দায়িত্ব হিসেবে নির্দেশ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা কোরআন ও হাদিসের মাধ্যমে আমাদের বিভিন্ন নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে আমরা পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব বজায় রেখে চলতে পারি।
পারস্পরিক শান্তি প্রতিষ্ঠা ও বিরোধ মীমাংসা
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেছেন:
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ
অর্থঃ "নিশ্চয়ই মুমিনরা পরস্পর ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে মীমাংসা করো এবং আল্লাহকে ভয় করো, যেন তোমাদের প্রতি করুণা করা হয়।" (সুরা হুজুরাত, আয়াত ১০)
এই আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, মুসলমানদের পারস্পরিক সম্পর্ক সংরক্ষণ এবং যে কোনো বিরোধের ক্ষেত্রে মীমাংসা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামে ভ্রাতৃত্ব ও একতাকে গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, যেন সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় থাকে।
পরস্পরের সহায়ক হওয়া
আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ
অর্থঃ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা পরস্পরের বন্ধু; তারা ভালো কাজে আদেশ দেয় এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। (সুরা তওবা, আয়াত ৭১)
এই আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, মুসলমানরা একে অপরের সহায়ক এবং সহযোগী হওয়া উচিত। এটি ভ্রাতৃত্বের সুন্দর উদাহরণ, যেখানে প্রত্যেক মুসলমান অপর মুসলমানের কল্যাণকামী হয়ে থাকে।
ঈর্ষা, বিদ্বেষ ও শত্রুতা পরিহার করা
হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“لَا تَحَاسَدُوا وَلَا تَنَاجَشُوا وَلَا تَبَاغَضُوا وَلَا تَدَابَرُوا وَلَا يَبِعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا”
অর্থঃ তোমরা হিংসা করো না, দাম বাড়ানোর জন্য প্রতিযোগিতা করো না, পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করো না এবং একে অপরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করো না। তোমরা আল্লাহর বান্দা এবং ভাই ভাই হয়ে থাকো। - (সহীহ মুসলিম)
এই হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন পরস্পরের মধ্যে হিংসা, বিদ্বেষ এবং প্রতারণা পরিহার করতে, যেন সমাজে একতা ও ভ্রাতৃত্বের পরিবেশ বজায় থাকে।
রক্ত, সম্পদ ও সম্মান হেফাজত করা
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“المُسْلِمُ أَخُو المُسْلِمِ، لَا يَظْلِمُهُ وَلَا يَخْذُلُهُ وَلَا يَحْقِرُهُ، بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ المُسْلِمَ، كُلُّ المُسْلِمِ عَلَى المُسْلِمِ حَرَامٌ دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ”
অর্থঃ মুসলিম মুসলিমের ভাই; সে তাকে নির্যাতন করবে না, তাকে একা ফেলে দেবে না এবং তাকে অবমাননা করবে না। মুসলমানদের জন্য হারাম হলো তার রক্ত, সম্পদ ও সম্মান। - (সহীহ মুসলিম)
এই হাদিস মুসলমানদেরকে নির্দেশ দেয়, যেন তারা একে অপরের প্রতি অন্যায় না করে এবং পরস্পরের রক্ত, সম্পদ ও সম্মানকে রক্ষা করে। এটি একটি বিশাল শিক্ষা, যা ভ্রাতৃত্ববোধকে আরও মজবুত করে তোলে।
জান্নাতে প্রবেশের শর্ত
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
لَا تَدْخُلُونَ الجَنَّةَ حتَّى تُؤْمِنُوا وَلَا تُؤْمِنُوا حتَّى تَحَابُّوا
অর্থঃ তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না যতক্ষণ না ঈমান আনবে, আর তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না একে অপরকে ভালোবাসবে। (সহীহ মুসলিম)
এই হাদিসে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, জান্নাতে প্রবেশের জন্য ঈমান অপরিহার্য এবং সেই ঈমান পূর্ণ হয় মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে।
মুসলমানের উপর মুসলমানের ছয়টি অধিকার রয়েছে
হাদিস
"حَقُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ سِتٌّ: إِذَا لَقِيتَهُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ، وَإِذَا دَعَاكَ فَأَجِبْهُ، وَإِذَا اسْتَنْصَحَكَ فَانْصَحْ لَهُ، وَإِذَا عَطَسَ فَحَمِدَ اللَّهَ فَشَمِّتْهُ، وَإِذَا مَرِضَ فَعُدْهُ، وَإِذَا مَاتَ فَاتَّبِعْهُ"
অর্থঃ মুসলমানের উপর মুসলমানের ছয়টি অধিকার রয়েছে: যখন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করো, তাকে সালাম দাও; যখন সে তোমাকে দাওয়াত দেয়, তা গ্রহণ করো; যখন সে তোমার পরামর্শ চায়, তাকে সৎ পরামর্শ দাও; যখন সে হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলে, তার জন্য দোয়া করো; যখন সে অসুস্থ হয়, তার খোঁজখবর নাও; এবং যখন সে মারা যায়, তার জানাযায় অংশগ্রহণ করো। (সহীহ মুসলিম)
সহানুভূতি ও ভালোবাসা প্রদর্শন
হাদিস:
مَثَلُ الْمُؤْمِنِينَ فِي تَوَادِّهِمْ وَتَرَاحُمِهِمْ وَتَعَاطُفِهِمْ مَثَلُ الْجَسَدِ، إِذَا اشْتَكَى مِنْهُ عُضْوٌ تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ الْجَسَدِ بِالسَّهَرِ وَالْحُمَّى
অর্থঃ মুমিনদের উদাহরণ তাদের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা, মমতা ও সহানুভূতির ক্ষেত্রে একটি দেহের মতো। যখন দেহের কোনো অংশ কষ্ট পায়, তখন পুরো দেহ তার জন্য দুঃখ অনুভব করে। - (সহীহ মুসলিম)
সহযোগিতা ও সহমর্মিতা
কোরআনের আয়াত:
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى
তোমরা কল্যাণ ও তাকওয়ার কাজে একে অপরের সহযোগিতা করো। - (সুরা মায়েদা, আয়াত ২)
হাদিস:
مَن نَفَّسَ عَن مُؤمِنٍ كُرْبَةً مِن كُرَبِ الدُّنْيَا نَفَّسَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِن كُرَبِ يَومِ القِيَامَةِ
অর্থঃ যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোনো মুমিনের দুঃখ দূর করে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দুঃখ দূর করবেন। - (সহীহ মুসলিম)
দোষ গোপন করা
হাদিস:
مَن سَتَرَ مُسلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ في الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ
অর্থঃ যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন করে, আল্লাহ তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে দোষ গোপন করবেন। - (সহীহ মুসলিম)
পরনিন্দা থেকে বিরত থাকা
কোরআনের আয়াত:
وَلَا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا
অর্থঃ তোমরা একে অপরের গীবত করো না। - (সুরা হুজুরাত, আয়াত ১২)
সত্যিকার মুসলমানের পরিচয় দেওয়া
কোরআনের আয়াত:
الَّذِينَ يُنفِقُونَ فِى ٱلسَّرَّاءِ وَٱلضَّرَّاءِ وَٱلْكَاظِمِينَ ٱلْغَيْظَ وَٱلْعَٰفِينَ عَنِ ٱلنَّاسِ ۚ وَٱللَّـهُ يُحِبُّ ٱلْمُحْسِنِينَ
"যারা বিপদে ও আরামে, এবং যারা রাগ চেপে রাখে, এবং যারা মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল থাকে, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে ভালোবাসেন।"
হাদিস:
الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ
অর্থঃ সত্যিকার মুসলমান হলো সেই ব্যক্তি যার হাত ও জবান থেকে অন্যান্য মুসলমান নিরাপদ থাকে। - (সহীহ বুখারি)
প্রতিবেশীর অধিকার
প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়ার বিষয়ে কুরআন এবং হাদিসে অনেক নির্দেশনা রয়েছে। এগুলো আমাদেরকে প্রতিবেশীর প্রতি সহানুভূতি এবং ন্যায়পরায়ণতা অবলম্বন করতে উৎসাহিত করে। নিচে কুরআনের আয়াত এবং হাদিসগুলো উল্লেখ করা হলো:
সূরা আল-হুজুরাত (49:11)
يَآ أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا۟ لَا يَسْخَرْ قَوْمٌۭ مِّنْ قَوْمٍۢ عَسَىٰٓ أَنْ يَكُونُوا۟ خَيْرًۭا مِّنْهُمْ ۚ وَلَا نِسَاءٌۭ مِّنْ نِسَاءٍۢ عَسَىٰٓ أَنْ يَكُنَّ خَيْرًۭا مِّنْهُنَّ ۚ وَلَا تَلْمِزُوا۟ أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا۟ بِالْأَلْقَابِ ۚ بِئْسَ ٱسْمُ ٱلْفُسُوقِ بَعْدَ ٱلْإِيمَٰنِ ۚ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ
"হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরকে উপহাস করোনা, হতে পারে তারা তোমাদের থেকে উত্তম। এবং নারীরা যেন পুরুষদের উপহাস না করে, হতে পারে তারা তাদের চেয়ে উত্তম। একে অপরকে নিন্দা বা দোষারোপ করো না, এবং নিজেদের মধ্যকার খারাপ নাম্বার বা কটূক্তি ব্যবহার করো না। বিশ্বাসের পর গোনাহের নাম হওয়া খুবই নিকৃষ্ট।"
সূরা আল-আল-ইমরান (3:134)
الَّذِينَ يُنفِقُونَ فِى ٱلسَّرَّاءِ وَٱلضَّرَّاءِ وَٱلْكَاظِمِينَ ٱلْغَيْظَ وَٱلْعَٰفِينَ عَنِ ٱلنَّاسِ ۚ وَٱللَّـهُ يُحِبُّ ٱلْمُحْسِنِينَ
"যারা বিপদে ও আরামে, এবং যারা রাগ চেপে রাখে, এবং যারা মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল থাকে, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে ভালোবাসেন।"
হাদিসসমূহ:
১. হাদিস
عَنْ عَبْدِ اللَّـهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّـهِ ﷺ: "مَن لا يُؤْذِي جَارَهُ فَهُوَ فِي جَنَّتِهِ"
অর্থঃ আব্দুল্লাহ ইবনু উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: 'যে ব্যক্তি তার প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় না, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। - (সহীহ মুসলিম, হাদিস 2564)
২. হাদিস
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّـهِ ﷺ: "وَاللَّـهِ لَا يُؤْمِنُ، وَلَا يُؤْمِنُ، وَلَا يُؤْمِنُ، قِيلَ: مَن يَا رَسُولَ اللَّـهِ؟ قَالَ: مَن لا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ"
অর্থঃ আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: 'সে মুমিন নয়, সে মুমিন নয়, সে মুমিন নয়।' সাহাবীরা প্রশ্ন করলেন, 'কীভাবে, হে আল্লাহর রাসূল?' তিনি বললেন, 'যে ব্যক্তি তার প্রতিবেশীকে তার ক্ষতি থেকে নিরাপদ রাখতে পারে না। - (সহীহ বুখারি, হাদিস 6014)
৩. হাদিস
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّـهِ ﷺ: "مَن لَا يَحْتَسِبُ وَصِلَتَهُ لِلَّهِ لَا يَقْبَلُ اللَّـهُ مِنْهُ"
অর্থঃ আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: 'যে ব্যক্তি তার প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখার জন্য আল্লাহর রাস্তায় কাজ করে না, আল্লাহ তার কাজ গ্রহণ করেন না। - (সহীহ মুসলিম, হাদিস 2559)
কুরআন ও হাদিসে প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেওয়ার উপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রতিবেশীর প্রতি সহানুভূতি, শ্রদ্ধা এবং ভালো আচরণ ইসলামের মূলনীতি। আল্লাহর রাসূল (সা.) বারবার আমাদের সতর্ক করেছেন যে, প্রতিবেশীর সঙ্গে সৎ, সদয় এবং সহনশীল আচরণ করা উচিত।
নিঃসন্দেহে, নিচে প্রথম খুতবাটি আরবি ভাষায় জের ও জবরসহ দেওয়া হলো:
الْخُطْبَةُ الأُوْلَىٰ
الحمدُ لِلَّهِ نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِينُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ، وَنَعُوذُ بِاللََّّهِ مِن شُرُورِ أَنْفُسِنَا وَمِن سَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا، مَن يَهْدِهِ اللَّـهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ وَمَن يُضْلِلْ فَلَا هَادِيَ لَهُ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللَّـهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ.
أما بعدُ، فإنَّ أَصْدَقَ الحَدِيثِ كِتَابُ اللَّـهِ وَخَيْرَ الهَدْيِ هَدْيُ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم، وَشَرَّ الأمورِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ وَكُلَّ ضَلاَلَةٍ فِي النَّارِ.
يَا أَيُّهَا النَّاسُ، أَوْصِيكُمْ وَنَفْسِيَ الْمُقَصِّرَةَ بِتَقْوَى اللَّـهِ، فَاتَّقُوا اللَّـهَ فَإِنَّ التَّقْوَى فَوزٌ لَنَا فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ.
يَقُولُ اللَّـهُ تَعَالَى فِي كِتَابِهِ الْكَرِيمِ:
{يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّـهَ وَقُولُوا قَوْلًا سَدِيدًا، يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَمَن يُطِعِ اللَّـهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيمًا} [الأحزاب: 70-71]
أيها المؤمنون، إِنَّ اللَّـهَ تَعَالَى قَدْ أَمَرَنَا بِالْتَحَابِّ وَالتَّعَاوُنِ وَالتَّآخِي بَيْنَنَا فِي الْإِسْلَامِ، فَقَالَ تَعَالَى:
{إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّـهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ} [الحجرات: 10]
وفي حديث رسول الله صلى الله عليه وسلم:
"المسلمُ أخو المسلمِ لا يظلمُهُ ولا يخذلُهُ ولا يحقرُهُ، كلُّ المسلمِ على المسلمِ حرامٌ دمُهُ ومالُهُ وعرضُهُ" [صحيح مسلم]
أيها المؤمنون، يجب علينا أن نَحْفَظَ عَلَى العَلاَقَاتِ الإِخْوَةِ بَيْنَنَا وَنَصُونَ حُقُوقَ بَعْضِنَا البَعْضِ، وَأَلَّا نَسْمَحَ لِلْحَسَدِ أَوْ البَغْضَاءِ أَنْ تُدَمِّرَ مَا بَيْنَنَا مِنْ مَحَبَّةٍ وَأُخُوَّةٍ. كَمَا أَنَّ التَّعَاوُنَ وَالتَّضَامُنَ بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ مِنْ أَهَمِّ وَاجِبَاتِنَا الَّتِي تَؤَدِّي إِلَى تَعْزِيزِ وَحْدَةِ الْأُمَّةِ الْإِسْلَامِيَّةِ.
নিচে খুতবার শেষে পড়ার জন্য কিছু আরবি দোয়া উল্লেখ করা হলো:
اللَّهُمَّ اهْدِنَا فِيمَنْ هَدَيْتَ، وَعَافِنَا فِيمَنْ عَافَيْتَ، وَتَوَلَّنَا فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ، وَبَارِكْ لَنَا فِيمَا أَعْطَيْتَ، وَقِنَا شَرَّ مَا قَضَيْتَ، إِنَّكَ تَقْضِي وَلَا يُقْضَى عَلَيْكَ، إِنَّهُ لَا يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ، وَلَا يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ، تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ۔
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَنَا وَلِوَالِدِينَا وَلِأَسَاتِذَتِنَا وَلِمَنْ لَهُ حَقٌّ عَلَيْنَا وَلِجَمِيعِ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَالْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ، الأَحْيَاءِ مِنْهُمْ وَالأَمْوَاتِ، إِنَّكَ سَمِيعٌ قَرِيبٌ مُجِيبُ الدَّعَوَاتِ۔
اللَّهُمَّ أَصْلِحْ أَحْوَالَ الْمُسْلِمِينَ فِي كُلِّ مَكَانٍ، وَأَعِزَّ الإِسْلَامَ وَالْمُسْلِمِينَ، وَأَذِلَّ الشِّرْكَ وَالْمُشْرِكِينَ، وَدَمِّرْ أَعْدَاءَ الدِّينِ، وَانْصُرْ إِخْوَانَنَا الْمُسْتَضْعَفِينَ فِي كُلِّ مَكَانٍ۔
اللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوذُ بِكَ مِنَ الْفِتَنِ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ، وَنَعُوذُ بِكَ مِنَ الْمَحْنِ وَالْمَغْرَمِ وَالْمَأْثَمِ، وَنَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَنَعُوذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ।
5. رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ।